রোববারের ছোট গল্প

কাহিনী

পলাশ দাস

শহরের এক প্রান্তে অবস্থিত একটি বৃদ্ধাশ্রম, নাম 100 নট আউট|রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তর কিছু বৃদ্ধ বৃদ্ধার এটা আশ্রয় স্থল|এখানে সবার একটাই টার্গেট জীবনের শেষ কটা দিন হেসে খেলে কাটাতে হবে এবং হাসতে হাসতে করতে হবে সেঞ্চুরি|নামে বৃদ্ধাশ্রম হলেও আসলে পরিবেশ অনেকটা ক্লাব এর মতো|বাসিন্দারা মেজাজের দিক দিয়েও বেশ রসিক এবং প্রান খোলা|

অনেকে রকম মজার ও  অদ্ভুত চরিত্রে ঠাসা এই 100 নট আউট|এক একজনের জীবনের গল্প এক এক রকম এবং এই বাড়িতে তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব ভূমিকা আছে|কেউ প্রতিরক্ষা দপ্তর সামলায় তো কেউ, অর্থ দপ্তর, শ্রম দপ্তর এবং খাদ্য দপ্তরও বন্টন করা আছে একেকজন কে|

চরিত্র গুলির মধ্যে আছে অবসর প্রাপ্ত মেয়র রণজয় বসাক,তান্ত্রিক জ্যোতিষী রমাপদ শাস্ত্রী,পুলিশ কর্তা অমিয় হালদার,সেফ প্রদীপ বসু|ডাক্তার শেফালী ঘোষ, কবি নিমাই মিত্র এবং আরো অনেকে|এদের মধ্যে মনি প্রাক্তন আমলা অশোক রায়|তিনি এই বৃদ্ধাশ্রম বানিয়েছেন|শেষ বয়সে তিনি একা থাকতে চাননি, বিদেশে ছেলের কাছে যাননি আবার বৃদ্ধাশ্রম কনসেপ্ট টাই তার পছন্দ নয়|টাই এই সিদ্ধান্ত|

অশোক বাবুর এক ভাগ্নি আছে, নাম অনিন্দিতা সে সবার দেখাশোনা করে, বোহেমিয়ান টাইপের মেয়ে|মাঝে মাঝে আসে সবাইকে শাসন করে সব খুঁটিয়ে দেখে আবার কিছুদিনের জন্যে উধাও হয়ে যায়|

এই ভাবেই চলছে 100 নট আউট এর বাসিন্দাদের  জীবন যাত্রা|প্রেম, ঠাট্টা তামাশা, ভুল বোঝাবুঝি খেলা, পিকনিক সবই আছে তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে যায় বাসিন্দাদের একে অন্যের প্রতি আন্তরিকতা ও মূল্যবোধ|

কিছুদিন পর এই বাড়ির জায়গায় উপর নজর পড়ে এক অসৎ প্রোমোটার মানিক ও দুর্নীতি গ্রস্থ রাজনীতি বিদা ও লোকাল এম এল এ যুধিষ্টির সাহারা|সমস্যায় পড়েন 100 নট আউট এর বাসিন্দারা|কঠিন অমানবিক ও দুর্নীতি গ্রস্থ পৃথিবীর মুখোমুখী হয় তারা|কিন্তু রুখে দাঁড়ান তারা এবং সাময়িক ভাবে পিছু হটে প্রোমোটার ও নেতা|

কিছুদিন পর গভীর রাতে এক চোর ধরা পড়ে 100 নট আউট এ|চোর কে না পিটিয়ে না পুলিশে দিয়ে তাকে বৃদ্ধাশ্রমেই রাখা হয়|ঠিক হয় তাকে এখানেই কাজ দেয়া হবে, মাইনে দেয়া হবে এবং সংশোধন এর একটা সুযোগ দেয়া হবে|সেই থেকে চোর ইমরান  এই বাড়িতেই থাকতে শুরু করে এবং সবার মন জয় করে নেয়|

কিছুদিন পর অনিন্দিতা আসে এবং এখানে থাকতে শুরু করে|ক্রমে অনিন্দিতা ও ইমরানের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়|দুজনে বিয়ে করবে ঠিক করে|বিয়ের ঠিক আগেই হটাৎ এক রাতে ঘটনা অন্য দিকে মোর নেয়|বাড়ির বাসিন্দা অমিয় বাবু জানিয়ে দেয়|আসল ঘটনা তিনি ধরে ফেলেছেন|সন্দেহ হওয়ায় তিনি লোক লাগিয়ে ছিলেন ইমরানের পেছনে|জানতে পেরেছেন ইমরান প্রোমোটার এর লোক|এসেছিলো অশোক বাবুদের পথে বসিয়ে প্রোমোটার এর জয় নিশ্চিত করতে পড়ে প্ল্যান বদলায় এবং সিক্রেট এজেন্ট হিসেবে সে কাজ করছিলো সুযোগ পেলেই দলিলে সই করিয়ে সে সব হাতিয়ে নিতো|

ইমরান সব স্বীকার করে এবং বলে খারাপ উদ্যেশে এলেও এখন সে অন্য মানুষ|সে অনিন্দিতা কে সত্যি ভালোবাসে এবং এই বাড়ির বাসিন্দাদের নিজের লোক ভাবে|কেউ বিশ্বাস করে না|অনিন্দিতাও তার হাত ছেড়ে দেয়|চলে যায় ইমরান|

কিছুদিন পর বোঝা যায় এবার প্রোমোটার ও নেতা অল আউট এটাক এ যাবে|ধমকি, অত্যাচার এবং প্রতিহিংসা চরমে ওঠে|কোনো ঠাসা হয়ে পরে 100 নট আউট এর বাসিন্দারা|এবার অনিন্দিতাকে  পাশে পায় ইমরান সবাইকে বোঝায় একটা সুযোগ পেলেই সে প্রমান করে দেবে যে সে সৎ এবং প্রোমোটার ও নেতাও জব্দ হবে|একটা সিক্রেট ফাইলে নেতা ও প্রোমোটার এর সব কুকীর্তি নথিভুক্ত আছে|ওটা হাতালেই ওরা হেরে যাবে|

অনিন্দিতা নিজের সৌন্দর্য ও যৌন আবেদন কে কাজে লাগায় এবং ওই নেতা ও প্রোমোটারের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে|ইমরান নিজের প্রানের ঝুঁকি নিয়ে অনিন্দিতার পাশে থাকে এবং এক রাতে এই ফাইল হাতিয়ে নেয়|

জিতে যায় 100 নট আউট এর বাসিন্দারা|হার মেনে নিয়ে পালিয়ে যায় প্রোমোটার মানিক আর নেতা যুধিষ্টির|অনিন্দিতার সাথে ইমরানের বিয়ে মহা ধুমধামে অনুষ্ঠিত হয়|

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here